শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪

​শাড়ি পরব না ? পরব না শাড়ি -২

জয়া ঘটক। পেশায় সহযোগী অধ্যাপিকা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্ববিদ্যালয়, হোজাই। নেশায় কবি

শাড়ি আর নারী অবিচ্ছেদ্য। এক ছাড়া আরেকজন কখনও পূর্ণ হয়ে ওঠে না।দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে উৎসবের দিনগুলোতেও !

প্রথম শাড়ি পরার মুহুর্তের কথা আমার মনে হয় না কোনো নারী সারাজীবন ভুলতে পারেন ! আমার বাবা আমাকে প্রথম যে শাড়িটি কিনে দিয়েছিলেন সেটি এখনও রেখে দিয়েছি যত্ন করে! কালোর মধ্যে জড়ির কাজ করা জর্জেট শাড়িটি আমার জীবনের প্রথম শাড়ি তার ওপর পুজোর স্মৃতি নিয়ে আমাকে জড়িয়ে রেখেছে এখনও। পুজোর সাথে শাড়ির সম্পর্ক আরও অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ ।আলোকজ্জ্বল উৎসবের আবহ।চারদিকে চোখ ধাঁধানো আলোর রোশনাই। মনে এক অদ্ভুত আনন্দের সুর গুনগুনিয়ে যায়! কিন্তু এবারের পুজো সম্পূর্ণ আলাদা। আসলে এবার আমরা শাড়ি পরে বের হতে পারছি না।কেননা পৃথিবীর এখন গভীর অসুখ। এক বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি এখন আমরা।এইবার দেবী দুর্গারও একমাস কোয়ারেন্টিন। অনেক জায়গায় ঘট পুজো করা হবে।কিন্তু তাতে শাড়ি কি দোষ করেছে ?

আমি শাড়ি পাগলের মতো কিনি।তিন আলমারি ভর্তি আমার শাড়ি।

5f8b1c43b97c9.jpg

মাঝে মাঝে মনে হয় আমি একদিন এই সমস্ত শাড়ির নিচে চাপা পড়ে মরে যাবো। দিল্লি কোলকাতা,চেন্নাই যেখানেই যাই না কেন শাড়ি আমি প্রচুর কিনি।একবার দিল্লিতে প্রচুর শাড়ি কিনছি।ছেলে আর ছেলের বাবা বাইরে অপেক্ষায়।

সেবার আমার বেতন হয়নি।ছেলে এসে বলছে ,” মা ,বাবা বলছেন ,তোর মার বেতন হয়নি তবুও দেখছিস কিভাবে ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে যাচ্ছেন! বেতন হলে অবস্থা আরও কি হতো তাই ভাবছি

5f78b3fb47177.jpg

তসর

যাই হোক না কেন শাড়ি তো কিনবোই। আমার তসর আর জর্জেট শাড়ি খুব পছন্দ। অষ্টমীর দুপুরের জন্য বান্ধবীর বুটিক থেকে পছন্দ করেছি ওড়িশা তসর। রাতের জন্য ময়ূর রঙের জর্জেট বেনারসি।সপ্তমীর কথা বলতে ভুলেই গেলাম। সপ্তমীতে পরবো নীল রঙের অর্ধেক রেশম আর অর্ধেক মটকার সম্মেলনের শাড়ি।নবমীতে অবশ্যই জর্জেট।

5f8b1c7a959b2.jpg

নীল আর সাদা মেঘের ভেলার মতো রঙের। কত কিছু তো ভেবে রেখেছি।কিন্তু সবকিছুই সময় ও অবস্থার ওপর নির্ভর করছে। লকডাউন থাকলে ভেবেছি ঘরেই পরবো।

দুগ্গা দুগ্গা করে এই করোনা রূপ অসুরের মৃত্যুর অপেক্ষা করছি এখন।এবং আরও কি কি শাড়ি কিনবো তাও ভেবে যাচ্ছি অবশ্যই।