বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

​অন্য বসন্ত


এক এক সময় হঠাৎ করে মনে হয়,আমি যদি হাজার বছর ধরে পথ হেঁটে, ক্লান্ত প্রাণে কোন এক বসন্তের সন্ধে বেলায় তার কাছে যেতাম, তখন কি সেই মেয়েটি 'পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে' আমাকেও প্রশ্ন করত ?

তবে জীবনানন্দের সেই সময়টা ছিল আলাদা। হাজার খানেক না হলেও শত বছরের ব্যাবধানে 'বনলতা সেন' আজ অনেকটাই অন্যরকম ।

রকমারি ডিপি, হাজার হাজার লাইক আর ভুভুক্ষ প্রণয় প্রার্থীদের ভিড় ঠেলে তার কাছে পৌছানোটা 'মুশকিল নেহি, না মুমকিন হ্যা' । আর যদি সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করে 'একা হিম সন্ধেবেলা ভুবন পেরিয়ে ' তার কাছে কোনোক্রমে পৌছানো যায়, তবে সেই বা কেন বাইকওয়ালা রাজপুত্তুরদের ছেড়ে, একটা দাড়িমুখো, হাড়গিলগিলে কবি কে পাত্তা দেবে ? পাত্তা দেয় না, না দেওয়াটাই স্বাভাবিক ।

তবুও অবুঝ কিশোর কোন এক রহস্যময় কারণে, টিমটিমে হলুদ আলোয় ভরা গলির মুখে গিয়ে দাঁড়ায় ! ছোট বয়সের প্রেম এতটাই সুন্দর, সেখানে 'পাওয়া'র চেয়ে 'চাওয়া'তেই বেশি সুখ । প্রেমিকা পাত্তা দিচ্ছে না তো কি ? বুকের ভেতর থেকে রবি ঠাকুরতো দিব্যি গুনগুন করেছেন, "আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ..."

তবে প্রেম তো শুধু দেহাতিতো নয়, কখনো কখনো সমুদ্র দেখার চেয়ে, চান করতেই বেশি ভালো লাগে। ইচ্ছে করে দুনিয়ার সমস্ত পলাশ ফুল ওর স্কার্টের আঁচলে এনে জড় করি । তারপর হাঁটু মুড়ে বসে বলি "তোমাকে খুখুব ভালোবাসি " ।

অবশ্য সে সাহস আর সুযোগ দুটোর কোনটাই যথেষ্ট পরিমাণে না থাকার জন্য এমন ঘটনা ঘটেনি কোনদিন । শুধু দূর থেকে ওকে অস্থির চোখে চলে যেতে দেখেছি বারবার। বুকের ভেতরে তখন, "ফাগুন করিছে হা হা ফুলেরও বনে..."

তবে ঋতুরাজ খেয়ালী হলেও নিষ্ঠুর নয় । ওর ছেড়ে যাওয়া পথে, লেগে থাকা গন্ধ গুলোকে সযত্নে হাওয়ার ভেলায় করে পৌঁছে দিয়েছে আমার কাছে । আর সেই গন্ধগুলো কোয়ান্টাম ফিজিক্স এর সুত্রের মতন আমাকে বারবার নিয়ে যায় 'প্যারালাল ইউনিভার্সে' যেখানে শুধুই অন্ধকার আর অন্ধকার । যেখানে দুদণ্ড শান্তির জন্য, আমিও সুনীলের মতন অনায়াসে অমরত্বকে তাচ্ছিল্য করতে পারি । যদি সেখানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী একবারও আমাকে সেই বহু কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নটি করে "এতদিন কোথায় ছিলেন ? "

AIbEiAIAAABECLj104uWpPfzwQEiC3ZjYXJkX3Bob3RvKigzZWM1ZTg3NTc0ZmQ2ZjE5NjZjODA2YzgwN2YyMjY2OTJkODVhNWI2MAHPRl-6KWNSAhGu-8hmjz1WfW9TZw?sz=32ReplyForward