বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪

বাংলা সাহিত্যে নারীর অবদান

বাংলা সাহিত্যে নারীর অবদান অনস্বীকার্য। আঠারো শতকের মধ্যভাগে বাংলা সাহিত্যে নারী লেখিকাদের আবির্ভাব ঘটে।

বাংলা সাহিত্যকে তিনটি যুগে ভাগ করা হয়; প্রাচীন যুগ (৬৫০-১২০০), মধ্যযুগ বা অন্ধকার যুগ (১২০০-১৮০০) ও আধুনিক যুগ (১৮০০- এখন পর্যন্ত)। মধ্যযুগ অনেকেই অন্ধকার যুগ বলে দাবি করেন। কারণ এই যুগে রচিত কোন সাহিত্য কর্মের পরিচয় পাওয়া যায়নি। সে ক্ষেত্রে সাহিত্যে নারীদের ভূমিকা খুব একটা পিছিয়ে নেই। সেই সময় যেসব মহীয়সী নারীরা ঘরে ঘরে আলোর প্রদীপ জেলে দিয়ে গেছে। বাংলা সাহিত্যের এমন কয়েকজন গুণী লেখিকাদের পরিচয় এখানে নিয়ে আসা হলো।

স্বর্ণকুমারী দেবী

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম উল্লেখযোগ্য নারী সাহিত্যিক হিসেবে স্বর্ণকুমারী দেবীর নাম পরিচিত। স্বর্ণকুমারী দেবী ১৮৫৫ সালের ২৮ আগস্ট কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দ্বারকানাথ ঠাকুরের নাতনি ও দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের চতুর্থ মেয়ে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেয়ে পাঁচ বছরের বড় ছিলেন স্বর্ণকুমারী। সেই যুগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বর্ণকুমারী দেবীর মতো নারী সাহিত্যিকের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। তিনি ছিলেন শিক্ষিত বাঙালী নারীসমাজের প্রথম যুগের অন্যতম প্রতিনিধি। সঙ্গীত, নাটক ও সাহিত্যে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির পুরুষ সদস্যদের সৃষ্টিশীলতা স্বর্ণকুমারী দেবীকেও স্পর্শ করেছিল।

১৮৭৬ সালে স্বর্ণকুমারী দেবীর প্রথম উপন্যাস ‘দীপনির্বাণ’ প্রকাশিত হয়। এর আগে ১৮৫২ সালে হানা ক্যাথরিন মুলেনস ‘ফুলমণি ও করুণার বৃত্তান্ত’ প্রকাশ করে বাংলা ভাষার প্রথম ঔপন্যাসিকের মর্যাদা লাভ করেছিলেন। অন্যদিকে স্বর্ণকুমারী ছিলেন প্রথম বাঙালী নারী ঔপন্যাসিক। এরপর তিনি নাটক, কবিতা, গান ও বিজ্ঞান-বিষয়ক প্রবন্ধ রচনা করেন। এ বাঙালী কবি, ঔপন্যাসিক, সঙ্গীতকার ও সমাজ সংস্কারক ১৯৩২ সালের ৩ জুলাই কলকাতায় মারা যান।

নওয়াব ফয়জুন্নেসা

ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বাঙালি নারীদের তরফ থেকে বাংলা সাহিত্য সৃজনের কাজে স্বর্ণকুমারী দেবীর কাছাকাছি সময়ে আত্মনিয়োগ করেছিলেন নওয়াব ফয়জুন্নেসা। তিনি ১৮৫৮ সালে ত্রিপুরা জেলার পশ্চিম গাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। মুহম্মদ গাজী চৌধুরীর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। ফয়জুন্নেসার দাম্পত্য জীবন সুখময় হয়নি এবং পরিশেষে তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। নানা ব্যাধি ও অন্তর্জীবনের অশান্তিই তার সাহিত্য সাধনার অন্যতম কারণ। ফয়জুন্নেসার একটিমাত্র সাহিত্য কীর্তি ‘রূপজালাল’। তার এ আত্মজীবনীমূলক উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৮৭৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি।

চন্দ্রাবতী/রামী
(জন্ম: ১৫৫০ মৃত্যু: ১৬০০)
বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি কে? এই বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। কাজের প্রমাণ সাপেক্ষে চন্দ্রাবতীকেই ধরা যেতে পারে প্রথম নারী কবি। তাঁর অনেক কাজ রয়েছে, যেগুলো সম্পর্কে আমরা জানি। তবে, এর বাইরে আরেকজনের কথা এসে যায়। ইনি চন্দ্রাবতীরও আগে জন্ম নিয়েছেন। যদিও তাঁর বিষয়ে সব পণ্ডিত একমত না, তবুও তাঁকে অস্বীকার করা যায় না। কারণ, তাঁরও কিছু কবিতা, ভণিতা খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এই কবির নাম রামী।রামীর আগেও দুই একজন মহিলা কবির ভণিতা পাওয়া যায়, তবে সেগুলো তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য নয়।

এই রামীকে আমরা জানি। আসলেই তাঁর বিষয়ে অবগত আমরা। তবে, ভিন্নভাবে। রামীর সঙ্গে চণ্ডীদাসের স্মৃতি জড়িতরয়েছে। চণ্ডীদাস–রজকিনীর প্রেমের কাহিনি জানেন না, এমন লোক পাওয়াটা বিরলই বটে। প্রেমের মড়া জলে ডোবে না, এই গান শোনেননি, এমন লোক খুঁজে পাওয়া ভার। এই গানেই দুচরণ হচ্ছে, চণ্ডীদাস আর রজকিনী, তাঁরাই প্রেমের শিরোমণিগো। হ্যাঁ, এই রজকিনীই হচ্ছেন কবি রামী।

দ্বিজ চণ্ডীদাসের সাথেই রজকিনী রামীর প্রেম ছিলো। তরুণীরমণ নামের এক কবি ছিলেন আঠারো শতকের গোড়ার দিকে। তাঁর ‘সহজ সাধনাতত্ত্ব‘ নামে একটি ছোট গ্রন্থে চণ্ডীদাস ও রামীর প্রেম কাহিনির কথাও রয়েছে।

চণ্ডীদাসের মৃত্যু কীভাবে হয়েছিলো, সে সম্বন্ধে রামীর রচিত একটি গীতিকা আবিষ্কৃত হয়। এ সম্বন্ধে দীনেশ্চন্দ্র সেন বলেন, চণ্ডীদাসের মৃত্যু সম্বন্ধে প্রায় দুইশত বৎসরের প্রাচীন হস্তলিপি সম্বলিত একটি প্রমাণ বসন্ত বাবু আবিষ্কার করিয়াছেন। যা রামীর রচিত একটি গীতিকা।
কোঁথা যাও ওহে, প্রাণ বঁধূ মোর, দাসীরে উপেক্ষা করি। না দেখিয়া মুখ, ফাটে মোর বুক ধৈর্য ধরিতে নারি।।

তার পিতা মনসা মঙ্গল কাব্যের অন্যতম রচয়িতা দ্বিজ বংশী দাস এবং মাতার নাম সুলোচনা৷ নিবাস অধুনা বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার পাটোয়ারী গ্রাম৷ তার রচনাগুলোর মধ্যে মলুয়া, দস্যু কেনারামের পালা ও রামায়ণ কথা (অসমাপ্ত) অন্যতম৷ মৈমনসিংহ গীতিকায় তার কথা পাওয়া যায়৷ তাঁর নিজের জীবনের ট্র্যাজেডি নিয়ে রচিত লোকগাঁথা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অবিভক্ত ময়মনসিংহ জেলার মানুষের মুখে মুখে ফিরে এসেছে৷

বেগম রোকেয়া

১৮৮০ সালে রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে বেগম রোকেয়া জন্মগ্রহণ করেন। এক রক্ষণশীল পরিবারে সম্পূর্ণ প্রতিকূল এক পরিবেশে জন্মগ্রহণ করে নিজের চেষ্টা ও মনোবল সম্বল করে তিনি ইংরেজি, বাংলা ও উর্দু ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। সম্ভ্রান্ত ঘরে বেগম রোকেয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্নেহশীল ও মুক্ত মনের অধিকারী স্বামীর সংস্পর্শে এসে তিনি লেখাপড়া করার ও চিত্ত বিকাশের সুযোগ পান। কিন্তু স্বামীর সান্নিধ্য সুখ তার বেশিদিন সৌভাগ্য হয়নি। বিয়ের মাত্র দশ বছর পরে তার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। স্বামীর মৃত্যুর পর সংসারের প্রতি সব আকর্ষণ হারিয়ে তিনি সমাজ সংস্কার ও গঠনমূলক কাজে নিজেকে উজাড় করে দেন। বেগম রোকেয়া রচিত গ্রন্থ তার চিন্তা ও কর্মাদর্শের বাণীরূপ। মতিচূর, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী, সুলতানার স্বপ্ন প্রভৃতি লেখিকার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। ‘পদ্মরাগ’ বেগম রোকেয়া রচিত একটি উপন্যাস। সম্ভবত ‘পদ্মরাগ’ লেখিকার সর্বশেষ রচনা।

মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা

তিনি ১৯০৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাবনা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা খান বাহাদুর মোহাম্মদ সোলায়মান সিদ্দিক। এক সুস্থ সাংস্কৃতিক পরিবেশে জন্মগ্রহণ করায় তার কাব্য প্রতিভা অতি শৈশব প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তিনি প্রথম কবিতা লেখেন। মাত্র নয় বছর বয়সে কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘আল ইসলাম’ পত্রিকায় তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। তিরিশ বছর ধরে তার কবিতা সাপ্তাহিক ‘বেগম’ পত্রিকায় ছাপা হয়। তার রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘পসারিণী’ ১৯৩৮ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়। বাংলা ভাষায় মুসলমান মহিলা কবির এটাই প্রথম প্রকাশিত আধুনিক কবিতার বই।


শামসুন নাহার মাহমুদ

১৯০৮ সালে নোয়াখালী জেলার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বেগম মাহমুদের শিক্ষাজীবন অত্যন্ত কৃতিত্বপূর্ণ। প্রবেশিকা পরীক্ষায় তিনি তিন বিষয়ে ডিস্টিংশন নিয়ে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। বেগম মাহমুদ ১৯৩২ সালে বিএ এবং ১৯৪২ সালে এম এ পাস করেন। তিনিই বাংলাদেশের মুসলিম মেয়েদের মধ্যে প্রথম গ্র্যাজুয়েট। শৈশবেই শামসুন নাহারের সাহিত্য প্রতিভার প্রকাশ ঘটে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সম্পাদিত তৎকালীন কিশোর পত্র ‘আঙ্গুর’-এ তার প্রথম রচনা একটি কবিতা প্রকাশিত হয়। তিনি রচনা করেছেন রাকেয়া জীবনী, বেগম মহল, শিশুর শিক্ষা, আমার দেখা তুরস্ক ও সর্বশেষ রচনা নজরুলকে যেমন দেখেছি। শামসুর নাহার মাহমুদ ১৯৬৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

বেগম সুফিয়া কামাল

বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট মহিলা কবি বেগম সুফিয়া কামাল। তিনি ১৯১১ সালে বরিশাল জেলার শায়েস্তাবাদ পরগণায় মাতামহ সৈয়দ মুয়াজ্জম হোসেন চৌধুরীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। সুফিয়া কামাল স্কুল কলেজে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাননি। এগারো বছর বয়সে তার বিয়ে হয়। তবে স্বামীর সংস্পর্শে এসে তিনি ভাষা ও সাহিত্য চর্চার সুযোগ পান। সাহিত্য পাঠের পাশাপাশি সুফিয়া কামাল সাহিত্য রচনা শুরু করেন। ১৯২৬ সালে তাঁর প্রথম কবিতা বাসন্তী সেসময়ের প্রভাবশালী সাময়িকী সওগাতে প্রকাশিত হয়। এছাড়া তিনি গল্প, ভ্রমণ কাহিনী, প্রবন্ধ ও স্মৃতিকথাও লিখেছেন। কামিনী রায়ের পর বাংলা সাহিত্যে অনেকদিন পর্যন্ত বিশিষ্ট কোনো নারী কণ্ঠস্বর শোনা যায়নি। সুফিয়া কামালের কবিতায় সেই কণ্ঠস্বর যেন আবার নতুন করে বাংলা ভাষায় উচ্চারিত হলো। এই নন্দিত কবি ঢাকায় ১৯৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

সেলিনা হোসেন
১৯৪৭ সালের ১৪ জুন রাজশাহী শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একই সঙ্গে কথাসাহিত্যিক, গবেষক এবং প্রাবন্ধিক। জীবনের গভীর উপলব্ধির প্রকাশকে তিনি শুধু কথাসাহিত্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি, শাণিত ও শক্তিশালী গদ্যের নির্মাণে প্রবন্ধের আকারেও উপস্থাপন করেছেন। বেশ কয়েকটি উপন্যাসে তিনি বাংলার লোক-পুরাণের উজ্জ্বল চরিত্রগুলোকে নতুনভাবে এনেছেন। ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমীর গবেষণা সহকারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বিশ বছরেরও বেশি সময় ‘ধান শালিকের দেশ’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে বাংলা একাডেমীর প্রথম মহিলা পরিচালক হন।

নূরজাহান বেগম

বাংলাদেশে নারী সাংবাদিকতার অগ্রদূত এবং সাহিত্যিক। নূরজাহান বেগম সওগাত পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিনের মেয়ে। তিনি ভারত উপমহাদেশের প্রথম নারী সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘বেগম’ পত্রিকার সূচনালগ্ন থেকে সম্পাদনার কাজে জড়িত এবং ছয় দশক ধরে বেগম পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি ১৯২৫ সালের ৪ জুন চাঁদপুরের চালিতাতলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন ছিলেন‘মাসিক সওগাত’ এবং ‘সাপ্তাহিক বেগম’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং মা ফাতেমা খাতুন।

বাবা নাসিরউদ্দীনের উদ্যোগেই ১৯৪৭ সালের ২০ জুলাই প্রথম সাপ্তাহিক ‘বেগম’ পত্রিকা প্রকাশিত হয় যখন নূরজাহান বেগম বিএ পড়তেন। তাঁর বাবা প্রতিষ্ঠিত বেগম পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন সুফিয়া কামাল। তিনি প্রথম চার মাসএর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। শুরু থেকে নূরজাহান ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। তিনি বিয়ে করেন রোকনুজ্জামান খান (দাদা ভাই)কে।


মহাশ্বেতা দেবী

মহাশ্বেতা দেবী হিন্দু ধর্মের নিম্নজাত দলিতদের(যাদেরকে অছ্যুত বলে মনে করা হয়) অধিকার নিয়ে লেখালেখি করেন। তিনি অসম সমাজ ব্যবস্থার সমালোচনা করেন। তবে দেবী নারীবাদিতার ব্যাপারে খুব বেশি উদার মনোভাব পোষণ করতেন না। তিনি ১৯২৬ খ্রীষ্টাব্দে বাংলাদেশের ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সাঁওতাল ও উপজাতিদের ওপর কাজ এবংলেখার জন্য বিখ্যাত। তাঁর লেখা শতাধিক বইয়ের মধ্যে হাজার চুরাশির মা অন্যতম।

তসলিমা নাসরিন

স্বাধীনতার পর নারীবাদী ও আপসহীন লেখিকা হিসেবে পরিচিত, আলোচিত ও সমালোচিত হন তসলিমা নাসরিন। নারীপ্রগতিবাদী নন বরং কঠোর নারীবাদী যেখানে তিনি পুরুষের প্রতি আক্রোশ পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছেন।

সাহিত্যে নারী লেখকদের একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা হয়। এ প্রথা সর্বকালের এবং সর্বযুগের। ইংরেজি সাহিত্যের ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যায় মূলত পুরুষদের দ্বারা সাহিত্য নিয়ন্ত্রিত। কখনো কখনো নারী লেখকদের লেখাকে বিভিন্ন সাহিত্যে অবমূল্যায়ন করা হয়ে থাকে।

তবে বাংলা সাহিত্যে নারীলেখক যারা এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী নাম করেছেন তারা সকলেই নারীর অধিকার ও প্রগতি নিয়ে কথা বলেছেন। এটাই ছিল মূল বিষয়। এর বাহিরে কিছু লেখা রয়েছে সেগুলো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক। বাংলার নারীসাহিত্যকরা নারীর অধিকার নিয়ে লিখেছেন কারণ বাংলার নারী সবসময়ই অবহেলিত ও অত্যাচারিত। যা বিশ্বের অন্যান্য দেশেগুলোতে কম দেখা যায়। সাহিত্যে সেদিন অবশ্যই আসবে যেদিন ‘সাহিত্যে নারী’ কথাটির বিলুপ্তি ঘটবে। সাহিত্য হবে সার্বজনীন। যেদিন কোনো লেখকে লিখতে হবে না “বাংলা সাহিত্যে নারীর অবদান” বরং লিখবে ‘বিশ্বসাহিত্যে বাংলা সাহিত্যের অবদান ও অবস্থান’।