শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

পার্থ অগাস্টিনের কবিতা

বোকাচোদা

আমাকে চমৎকার জীবন উপহার দেবে বলে গরীবেরা খেটে যাচ্ছে। তাদের দান-দক্ষিণায় নিজেকে যথেষ্ট সম্মানিত বোধ করি। আমার জাঙ্গিয়া থেকে শুরু করে কমোড অব্ধি পরিষ্কার রাখে তারা। স্বচ্ছন্দে বিড়ালছানা, কুকুরছানা, এমনকি অ্যাকুয়ারিয়ামে লাল-নীল মাছও পুষি। যদিও এইসব পোষাপুষি আমার ওয়ালেট থেকে পড়ে যাওয়া দু-এক কয়েনের হিশাব।

5d8f675fdef87.jpg

.

নির্বাচনে জিতে গেলে পাড়ার গরীবেরা দিন-রাত ফড়ফড় করে ডানা ঝাপটায়। অথচ কবুতর আমার ভীষণ প্রিয়। তারা জানে না, কবুতরকে আমি বাসমতি চাল খেতে দিই। যা-ই হোক, গরীবদের জন্য আমার গলাটায় যথেষ্ট। স্পিকারের সামনে গিয়ে যখন চেঁচিয়ে বলি, 'তোমাদের খালি পেটে ফুলের বাগান লাগিয়ে দেবো।' বোকাচোদারা ভেবে নেয়, তাদের চোখের সামনে ভাতের ফেনা উপচিয়ে পড়ছে। আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো, তারা হাততালি দেয় আর ভালোবাসে আমায়। যদিও আমি অধিক ভালোবাসা দিয়েছি তাদের। তবুও তারা বলে, 'আমরা গরীব, অসুখী!'

.

এইসব কেমন বোকাচোদা রাস্তায়-রাস্তায় রেখে আমি চেয়ারে বসে আছি বলুন তো, বাংলাদেশ!


কামিনী


ঘৃণার বারুদ উড়ে যায় কামিনীর দিকে

চোখ ফেরালেই নাব্যতা খেয়ালের ঘাটে

এখানে বর্শা নেই,নেই বল্লম

তূণে নেই বিষমাখা ফলা

ভালোবাসা পুড়ে যায় ভূল অভিশাপে

ফেরার নদীর পায়ে ঈর্ষা-নূপুর

কথা ডুবে যায়,জল সরে যায়

কামিনীর নথ ভাসে ঘৃণা-গঙ্গায়

***


জিরো পয়েন্ট

5d8f6c561f6fa.jpg

দেখেছিলাম জল ও নুড়ির সংসার। জমাট বাঁধা পাথর। ক্ষেপণাস্ত্রের মতো ঝরে পড়া অজস্র পাহাড়ি ক্রন্দন।এ দৃশ্য প্রকৃতির। সমস্ত সৃষ্টির ভেতর প্রবহমান জলের আঁচল বিছানো যেনো। তবুও কৌশলী জোড়া চোখে ঘূর্ণিত মৌন লাটিম। নিয়ে যায় দৃশ্যর বিপরীতে।.

জরাজীর্ণ পা'য়ের নিচে টগবগে এগিয়ে চলে, লাল-নীল ক্ষতবিক্ষত পাথর। ওপারের কাঁটাতার ভেদ হয়ে আসা অসংখ্য কালো ঘোড়া। তাদের ভয়ার্ত মুখ হতে ঝরে পড়া আগুনের লালা, আমার পরাধীন হাতে জড়িয়ে থাকা ফেলানির লাশকে এখনো পুড়িয়ে মারে।.

এ দৃশ্য দেখতে-দেখতে ফিরি বাড়ির পথে। দেখি অনন্ত বাতাসের মাঝে, ঝরা পাতার মতো উড়ে যাওয়া লাল-সবুজ পতাকাটি এখনো আমার মানচিত্র জড়িয়ে রাখে শীতল অভিমানে।



শরীরবৃত্তান্ত


জল ডুবে যায় জলের ঘটে

জল ফুরিয়ে কাঁপন ছড়ায়;

এক গেলাসে ভাসি আমি

আপন পিয়াস আপন ঠোঁটে --

ঝরে বর্ষা ইথার-বিথার

কাঁপা গলায় প্রশ্ন বিঁধে;

জল ভূগোলের এ কোন নেশা

উষ্ণ বুকে পাহাড় কাটে !

ঘুরছে লাঠিম জীর্ণ দেহে

অন্ধঘরের শব্দ ভুলে

ভরদুপুরে ক্লান্ত অসুখ

ছায়ার পিছু যাচ্ছে সরে --

ঈর্ষা কিছু সুখ বিছারে

অসুখ তবু হাতের রেখায়;

আগুন আগুন সুখের লতায়

পুড়ছেরে সুখ আগুন নেভা।