বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

দীঘা বারবার

5cbc01aeda2d4.jpg

দীঘায় যান নি এরকম বাঙ্গালী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।জীবনে এক না একবার অথবা একাধিক বার দীঘা গেছেন প্রায় সবাই।আমি নিজে কতবার যে গেছি তার ইয়ত্তা নেই!এমনকি বিয়ের পরে সময়াভাবে ছোট্ট করে হানিমুন সারতেও দীঘা এসেছিলাম!

দীঘায় এলে আমার লক্ষ্য থাকে ভরপুর সমুদ্রস্নানের মজা নেওয়া আর বিকেলবেলা সমুদ্রের পাড়ে বসে পেট ভরে হাওয়া খাওয়া।এ ব্যাপারে আমার প্রথম ও একমাত্র পছন্দ ওল্ড দীঘা।বেশ জমজমাটি আর জনবহুল জায়গা।নিউ দীঘায় আজ অবধি আমি থাকিনি।তবে অনেকেই বোল্ডার আর পাথর সম্বলিত বলে ওল্ড দীঘায় স্নান করা থেকে বিরত থাকেন।তাদের জন্য বলি ওল্ড দীঘায় ব্যারিস্টার কলোনি সংলগ্ন বী টি কিন্তু বিশাল এবং বালির বীচ।কোন পাথর বা বোল্ডার নেই।তাই স্নানের জন্য একেবারে আদর্শ ও বিপন্মুক্ত।

পাড়ে বসে ডাবের জল খেতে খেতে সমুদ্রবিলাস আর তারপর জলে নেমে স্নান পর্ব।দুই বা তিন ঘন্টা নিমেষে কেটে যাবে এইভাবে।


আর বিকেলে চলে যেতে পারেন ছোট গাড়ি ভাড়া করে তাজপুর বা মন্দারমণি।ফাঁকা নির্জন বিচ যাদের ভাল লাগে তাদের জন্য আদর্শ এইসব জায়গা।তবে থাকার পক্ষে বেশ ব্যায়বহুল।তাই সস্তায় থাকা আর সমুদ্রের স্বাদ নিতে গেলে আমাদের দীঘাই প্রকৃষ্ট স্থান,,,,"গরীবের গোয়া"!

এই পয়লা বৈশাখের প্রাক্কালে ঘুরে এলাম সেই দীঘা,,,,আরও একবার।কতবার হল আর গুনিনি।নববর্ষ উদযাপন করতে এর আগেও দীঘায় এসেছি।আসলে এই সময় খুব চিড়বিড়ে গরমটা তখনও শুরু হয় না,তাই নিশ্চিন্তে ঘোরা যায়।

প্রতিদিন খুব সকালে বীচে বসে সোনালী আলোর খেলা দেখতাম।আর সাথে মানুষের প্রতিচ্ছবি।দেখতে দেখতে সময় কোথা দিয়ে কেটে যেত।আর বেলা বাড়লেই সমুদ্রস্নান আর বিচ ফোটোগ্রাফারের কাছে আবশ্যিক ভাবে ছবি তোলা।এটা ছাড়া দীঘা ভ্রমণ আমার কাছে অসম্পূর্ণ!!

বিকেলবেলা চলে যেতাম টোটো ভাড়া করে মোহনায়।বিকেলে আর মাছের হাট বসত না,,,কিন্তু শুঁটকি মাছের গন্ধ কিন্তু পিছু ছাড়ত না।মোহনায় সমুদ্রের রূপ যেন আরও উত্তাল।দুচোখ ভরে দেখার মত।

সন্ধ্যাগুলো কাটত অলসভাবে ওল্ড দীঘার সৈকত সরণী বেয়ে হেঁটে বা চুপচাপ বসে।পাগল করা হাওয়া সারা গা,মাথা,মুখ ছুঁয়ে যেত আর সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে এক অদ্ভুত প্রশান্তি এনে দিত!!এই অনুভূতি শুধু দীঘাই পারে এনে দিতে!আমার ছেলে কিন্তু চুপ করে বসত না,,,,ও চড়ে বেড়াত ৫০ টাকার রিমোট কন্ট্রোলড গাড়িতে অথবা অক্লান্ত ভাবে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে চলত বুদ্বুদের ঝাঁক,,,,রঙবেরঙের বুদ্বুদ!

এইভাবেই দুটো দিন দিব্যি কেটে গিয়েছিল দেখতে দেখতে।তবে ফিরে আসার দিন মন খারাপ করিনি,,,,কারন আমি জানি আবার একদিন খুব শীঘ্রই ফিরে আসব দীঘাতে,,,,সেদিন আবার আঙ্গুল গুনব!!ক'বার যেন এলাম এই নিয়ে দীঘায় ???