ছায়াশরীর
বয়সটা কী দেখেছো!
চামড়ার ভাঁজ চোখে পড়লো বুঝি!
রক্তবর্ণ ঠোঁট, বুকের জমিনে উত্তাল ঢেউ
ফিকে সব সময়ের বিবর্তে
কোথাও খোঁজে পাবে না চেনামুখ
রাশিরাশি স্বপ্ন
সব দগ্ধ, বিমর্ষ, রুগ্ন
দেখেছো আলোর কুপিটা
ক্যামন নিভুনিভু
অন্ধকার ঘরের ছায়াশরীর;
ছুঁয়ে দেখবে!দেখো-
অনুভূতিগুলো মরা গাঙের জল
বুকের উত্তাপ হারিয়েছে সেই কবে
আধমরা জীবন শুধুই জ্বলছে অনলে
অপেক্ষায় যার
এইতো সেদিন ভালোবাসা এসেছিল
নবীন বিরহে কেঁদেছে বুকে জড়িয়ে
সান্ত্বনার ছলে জল চোখে তাকাতেই
প্রথম বিস্ময় অবনত দৃষ্টি
অভিযোগের পাহাড় ভাঙে;
জঞ্জাল-ঊর্ণাজাল ছিন্নভিন্ন করে-
সময়ের পাতা ঝরে, পলাতক কালপেঁচা
পুরোনো দিনের দিগন্ত মাড়ানো পদচিহ্ন
যেন কোমল মনে বিশ্বাসের ভিত্
কফির পেয়ালা হাতে স্বপ্ন;
অব্যাক্ত কথাগুলোও সরব
নিঃশব্দে অধরের কোলে এলানো মাথা
স্তব্ধতা ভাঙতে সহস্র চুমো লোমকুপ বুকে
ভুলে গেলে, ভুলে যেও এলোমেলো কথা
পা বাড়িয়ে যাওয়ার পথে তবুও বলে গেলে
আসা হবে না আর, অপেক্ষায় থাকতে যার…
আদিম গুহা
হাহাকারে ঝিমিয়ে থাকা মানবতা দেয় দৌঁড়
মৃত্যু বিলাপে যেন ভাঙছে নৈঃশব্দ্যের আড্ডা
মানুষের অভিশাপে নিষ্ফল উপাসনা
পেরোতে পারে না স্রষ্টার চৌকাঠ
আর্তচিৎকারে স্বয়ং ঈশ্বর;
মাথা নুয়ে ধ্যানমগ্ন কালের অহম
ভায়োলিনে বাজছে করুণ সুর
সময়ে শূন্য দ্রাঘিমায় শোনা যায়
মন্দিরের কীর্তন
সময়ে ভুলের খণ্ডচিত্রে দেখা যায়
হাঙরের জংশন
আর্তনাদ পতনের আয়ু মাপে
ডাকাতসম্প্রদায় এক খোয়াড়ে
ইদানীং অলীক স্বপ্নে মানুষ
নিচ্ছে ঠাঁই আদিম গুহায়
লুটতরাজ
বিশ্ব লুটেরা লুটে নিচ্ছে সময়ের কবজ
সবাই চুপ মিথ্যে অজুহাতে দিয়েছে ডুব
কেউ বলছে না কথা শুধু তাকিয়েই আছে
বিশ্ব লুটেরা লুটে নিচ্ছে প্রাগৈতিহাস জনপদ
বিজয় ইতিহাস কালের সাক্ষী ছায়ার আঁচল
কেউ দিচ্ছে না সাড়া শুধু আড়াল খোঁজে
বিশ্ব লুটেরা লুটে নিচ্ছে সোনালী দিনের গল্প
শৃঙ্খলিত জীবন-মান মানবিক আধিকার
সবাই বলছে কথা কেউ শুনে না কারো
দিনলিপি-২২১
সময়কে ডাকি রোদ পোহাতে
কেবলই মুখ ফিরিয়ে নেয়,
আর
আমি দুয়ারে দাঁড়িয়ে দেখি
অভিজাত্যের বড্ড অহংকার
সময়ে-অসময়ে
সময়ে-অসময়ে বুঝে মানুষ কতটুকু একা
বর্ষায় কতটুকু কাঁদে আকাশ
সময়ে বুঝে কালো চুলের ফাঁকে
উঁকি দেয় কত সাদা চুল;
সময়ে পারে বুঝতে কতটুকু দেয় সান্তনা
কতটুকুই পারে আঁকড়ে রাখতে
গভীর আদরে উষ্ণতা বাড়াতে
সময়ে-অসময়ে নিঃস্বার্থ প্রেমবন্দনায়।