মঙ্গলবার, মার্চ ১৯, ২০২৪

​অনন্তের পথিক


কত দূর রাস্তা ? রাস্তা কত দূর ?

সেই তো বিনয়পুর

জীবন হাঁটে যত দূর….

কবিতা তো একটা রাস্তা, জীবনের রাস্তা। শূন্যতার অভিমুখে স্তব্ধতার নিবিড় সংযমে কবিকে এগিয়ে যেতে হয়।

রাস্তায় কবির ঈশ্বর থাকেন।

কে কবির ঈশ্বর ?

কবির ঈশ্বর কবিরই ছায়া

কবি তাকেই অনুসরণ করেন। তাকে ধরা যায় না। ছোঁয়া যায় না। অথচ তার অভিমান

থাকে। সংরাগ থাকে। আনন্দ থাকে। দুঃখ থাকে। আলো-অন্ধকার তাও থাকে। বিশাল শূন্যতার নাথিংনেস্ বা

এম্পটিনেস্ থেকে তার উচ্চারণ মুদ্রিত হয় শব্দব্রহ্মের নিষিক্ত আত্মোৎসারে। প্রাচীন গ্রিক কসমোলজির

সেই বার্তা সমূহ সৃষ্টিরই ধারক — Nothing can be made from nothing. অর্থাৎ শূন্যের তরঙ্গগুলি

শূন্যতার বিনির্মাণেই মিলিয়ে যায়। কবি তারই নিয়ত বিস্ময়কে মহাবিস্ময়ের ছটায় উজ্জ্বল করে তোলেন।

ঈশ্বর সেখানেই বিরাজ করেন। কবির ঈশ্বর তো সেখানেই — God is nothing but God is everything. এই

নাথিং থেকে এভ্রিথিং এর দূরত্ব মাপার প্রচেষ্টা চলতেই থাকে। কবিতা এই দূরত্বের রাস্তাতেই ঘুরপাক খায়।

যে বোধ নিয়ে কবির উত্থান তা আদিপ্রজ্ঞারই সচল বিমূর্ত অভিব্যক্তি। যে পার্থিব ও জৈবিক চাহিদার

অবিনশ্বর প্রবৃত্তিগুলির জাগরণ ঘটে আবার জাগরণ থেকে তার মুক্তিও ঘটে। এক সময় কবি অনন্তের পথিক

হয়ে যান। আয়ুর সীমানা কবিকে বাঁধতে পারে না। আমেরিকান কবি ই ই কামিংস তাই বলেছেন — Unbeing dead

isn’t being alive. মৃত্যু যেন জীবনের বৃহৎ উৎস খুলে দেয়। ঈশ্বর তো তখন নাথিং থেকে এভ্রিথিং এ নিয়ে

যান কবিকে। যে আকাশটুকু তাঁর শূন্যতার বিবরণে বিদ্ধ, সেই আকাশটুকুই মহাকাশের সোপানে উত্থিত। তখন

এটুকুকে বোঝাতেই লিখতে হয় —

অসফলতাগুলি সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসে

আমার দো-তলায়, শ্রমের ঘরে

সহবাস বিছিয়ে রাখি সমূহ লেখায়

অবিশ্বাস এতদিনে বুঝে গেছে

আমি নই তার ক্রীতদাস….