শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪

সুবীর সরকারের দীর্ঘ কবিতা বন্দুকনামা



১।

ইদানিং ব্যবহৃত হচ্ছে না আর

ফ্রেম ও সিঁড়ি

অজ্ঞাত কারনেই আমরা পাদপ্রদীপের

সামনে

আবহ থেকে সরে যাওয়া আলো

গাছে গাছে গেঁথে রাখা ফলক

২।

সূত্র বলতে আলোড়ন ফেলা বইগুলি

খালবিলে ফোটা শালুক

দীর্ঘ ভূমিকায় তিনি লিখছেন কাঁটাগাছের

কথা

অভিজ্ঞতা থেকেই উঠে আসে সবকিছু

গান আর সংলাপের জন্য অপেক্ষা

৩।

আর ঘোড়া ও গাধাদের জন্য আস্তাবল

পথে পথে লুকোন ফরমান

হাওয়ায় হাওয়ায় আমাদের ব্যতিক্রমী হয়ে

ওঠা

দুপুর বিছিয়ে রাখে হাসপাতাল

নির্জনতা শুষে খায় হাসপাতাল

৪।

বিজ্ঞাপন আদতে ফাঁদ।ফাঁদে আটকে খেলা

চলছে

মহাসড়কে হাঁটতে হাঁটতে একটা আপাতনিরীহ

বাড়ি

রেডিওয় বাচ্চা বাঘের ডাক।

অন্ধকারে বসে লোকশ্রুতি গোছাতে শুরু

করি

৫।

জুতোর মধ্যে ঢুকে পড়ছে পিঁপড়ে

এরপর মালবাহকেরা গান ধরলো

আগুনে পোড়া জঙ্গল

আমরা হামাগুড়ি শিখছি

৬।

খামারবাড়ি।ভিলা।ও চোখে পড়ার মতো

উদ্যান।

কাঁটাগাছের বেড়ায় বসে থাকা পাখি

হেঁয়ালির মতো সবকিছু

প্রতিবেদন জুড়ে ধানখেত

মেঘেদের ছায়া

৭।

বিরক্তিকর বিজ্ঞাপনের পাশে ভেসে উঠছে তোমার

মুখ

জালে পেঁচিয়ে যাওয়া আমাদের কিটব্যাগ

সন্ধ্যেবেলায় সানগ্লাস পরে বেড়াতে বেরোই

হুবহু জেরক্স কপি,

ঝোঁপের আড়াল থেকে সে আমাকে

দেখছে

নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে গিয়ে হাহাকার

ফিরে এল

তোমার টোল পড়া গালে গাছেদের

ছায়া

সস্তায় কিনে আনছি পুরনো গয়না

হ্যান্ডসেক না করে তো যাওয়া যাবে

না!

স্থানীয় খাবারের পাশে পোষা বেড়াল

রেস্তোরা একটি জনপ্রিয় শব্দ

গমখেতে শুয়ে শুয়ে শুটিং-এর গল্প

কান্না ও সর্দির দেশ

মিনার ও জাদুঘর

ভিজতে ভিজতে দূর্গে ঢুকে

পড়ি

৮।

ঝলসানো গাছের মাথায় পাখি

আমি তার মুচকি হাসি পড়ে ফেলতে

চাইছি

জলে ডোবা হাইওয়ে,বাইপাস ধরি

অলিগলির মধ্য দিয়েই বেশ স্মৃতিশহরের

ঘোড়া

৯।

সন্নাসীদের মতো জীবন কাটাচ্ছি

বাড়ি ও গাড়ির ছাদে বরফ

তোমার চোখের জলে আমি হোঁচট

খাই

১০।

একটা বিশাল হাই-এর ভেতর ঢুকে পড়ছে

জীবন

সমস্ত শীতকাল জুড়ে সবাই ঘুড়ি ওড়াচ্ছে

অপেক্ষা মিরাকলের মতো।

মিথ্যাচারের সামনে বড় অসহায়

লাগে

গল্পের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া এভাবেই

ধীরগতির একটি ছবি দেখে এইমাত্র বেরিয়ে

এলাম

ঘুমেরও তো প্রস্তুতি থাকে!

তোমার স্বরের ওঠানামায় অদ্ভূত এক

ফ্রাস্টেসন

বিকেলের বেহালায় হাত রাখি

নাচগানের পাশে শান্ত হাসপাতাল

১১।

এত বড় খাদ্যতালিকা নিয়ে কি করি!

প্লেটে প্লেটে

মাগুরমাছ

জট পাকিয়ে যায় আর কর্মসূচি শুরু করি

আর খ্যাদ্যতালিকায় টিকটিকির লেজ

খাঁ খাঁ মাঠ;প্রতিবেদন পাঠ

করি

আমাদের গোপন সম্পর্কের কথা জেনে গেছে

সবাই

সূর্যাস্ত মাখতে মাখতে কতদূর চলে যায়

গান!

১২।

বন্দুক থেকে গুলি বেরিয়ে আসছে

এটি পাখিশিকারীর বন্দুক এবং মরচে

ধরা

শিস বাজিয়ে কে কাকে ডাকে!

আমাদের সম্পর্কের উপর পাখপাখালির

ছায়া

১৩।

গোপনীয়তা বজায় রাখতে গিয়ে বিষন্ন হয়ে

ওঠা

সূর্যাস্তের নিচে সাঁকোগুলি!

তোমার কাছ থেকে শুনে নিই টানাপোড়েনের

গল্পগুলি

১৪।

ভোরের ছবিতে কুলগাছ বসে থাকে

ভাঙনের দেশে হারমোনিয়াম

শোক থেকে সংগীত

আর্মিক্যাম্পের বাইরে হাসতে থাকেন

ড্রামবাদক

১৫।

আবার ছুঁড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছি

কাঠের উনুনের পাশে গান_

অল্প আলো।আদা মেশানো চা।সঙ্গে

বাজনা

ধরো বর্ষাকাল-

ভেজা গাছের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে

থাকা

কারণহীন হাসির দমক

ব্যাধির মতোন এক বিষন্নতা

আর মাথার ওপর নেমে আসা

মেঘ