বিকেলের রোদটুকু মুছে যেতেই আকাশের মায়া মায়া গোলাপি আলো এই পুরান ঢাকার পুরানো বাড়ির ছাদগুলোয় ঠিকরে নামে। আশে পাশে যে কয়টা নতুন অ্যাপার্টমেন্ট এলোমেলো গজিয়েছে, তাদের চকচকির ঠেলায় গোধূলিগুলো যেন মিইয়ে যায়। শীতকালে তো কথাই নেই। হলুদ, ডিজে পার্টী অথবা থার্টি ফার্স্টে মহল্লার পোলাপান ছাদ গরম করে রাখে। তাই এলাকার ‘ভদ্র’ মেয়েরা ছাদে ওঠে না। গোধূলি, উদাস বাতাস, গায়ে মাখা, এক আধটা ফুলের টবে পানি দেওয়া হয় কালেভদ্রে। বুকের ভেতরটা হাঁপিয়ে ওঠে কারো কারো। এই যেমন শেফালী। হেমন্তের এই বিকেলে বসে পলেস্তারা ওঠা তার ঘরের দেওয়াল দেখতে দেখতে ভারী ভারী দীর্ঘশ্বাস ফেলছে। নিজের অজান্তের এই দীর্ঘশ্বাস তার নিত্য অভ্যস্ততার অংশ, তাই সে ঠিক টের পায় না নিজে, কিন্তু মন যে ভার হয়ে আছে তা সে বোঝে। তার সামনে এক গাদা খাতা। সে সম্প্রতি এলাকার একটি স্কুলে চাকরি পেয়েছে। বেতন মাসে আট হাজার। তবে দু’মাস হ’ল নানা টাল বাহানায় দিচ্ছে না। শেফালী ঠিক করেছে, আর এক মাস দেখবে, তারপর…। শেফালী আবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে, আসলে তারপর কি করবে সে সত্যি জানেনা। তার বয়স পঁয়ত্রিশ। এই বয়সে ভাল কোন চাকরি পাওয়া সম্ভব না। আর পড়াশোনাও এমন কোন রসগোল্লা না যা সিভিতে সুবাস ছড়াবে। আর যদি ছড়াতোও তাহলেও চাকরী জুটত না। এখন চাকরী পেতে হোমরা চোমরা মামা, চাচা, ভাই লাগে। তার আছে লবডঙ্কা! অবশ্য, মাসুদ ভাই অনেক চেষ্টা চরিত্র করেছিল এককালে।

তখন সে মাত্র বিএ পাস করেছে। মাসুদ ভাই শেফালীর মায়ের দূরসম্পর্কের ভাইএর ছেলে হলেও তার পরিবারের সাথে খুব খাতির ছিল সে সময়। প্রায়ই দুপুরের আগে মাসুদ ভাই চলে আসত। শেফালী, তার ছোটবোন যূথী, ছোট ভাই রাজু আর মাঝে মাঝে বাবা মিলে মাসুদ ভাইয়ের সাথে আড্ডা জমাতো। টিভির নতুন বিজ্ঞাপন বা অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে, চলতি রাজনীতির হাল হকিকত, নাগরিক সমস্যা এমনকি কোথায় কোন নতুন গ্রহ আবিষ্কার হয়েছে বা নতুন কি প্রযুক্তি এসেছে সবই থাকত সেই আড্ডার দুপুরে। আড্ডায় বিরতি বসাতো মা টেবিলে খাবার সাজিয়ে।

মাসুদ ভাই যাওয়ার আগে শেফালীর সিভি চেয়ে নিত। শেফালীর তখন মন ভরা আশার কিলবিলানি। চকচকে চোখে সাইবার ক্যাফে ছুটত, পত্রিকায় চাকরীর নানা বিজ্ঞাপন দেখে অ্যাপ্লিকেশন পোস্ট করত, আর গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেলের মত মনে মনে কত কিই না ভাবত…বেতনের টাকায় কি কি করবে, কাকে কি দিতে হবে। এখন মনে হলে হাসি আসে, করুণাও জাগে নিজের প্রতি। আহা বেচারী! জীবনটা বড্ড কঠিন। জটিলও। তা কি সেই মেয়েটা তখন বুঝত!

মাসুদ ভাইএর চেষ্টায় একবার এক ল’ফারমে গেল। রিসিপশনিস্ট পদে ইন্টার্ভিউ দিতে। বুকটা উত্তেজনায় ঢিপ ঢিপ করছিল। ইন্টার্ভিউ দিতে বসে তার ফাইল টাইল কিছু দেখল না। এক লোক অনবরত তার বুকের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করতে লাগল- ভেনিজুয়েলার রাজধানীর নাম কি, পলাশি কি, বিশ্বকাপ ফুটবলে সেমিফাইনালে কারা ছিল, আরও কি সব হাবিজাবি। কি কি উত্তর দিয়েছিল আজ আর মনে নেই তার। তবে, একদম শেষে, এক জন যখন জিজ্ঞাস করল, “ আপনি কি ট্যুরে যেতে পারবেন, আই মিন নাইট স্টে করতে পারবেন?” শেফালী অবাক হয়ে বলেছে, “স্যার, আমার কাজ তো ফ্রন্ট ডেস্কে থাকবে, ট্যুরে যেতে হবে এরকম তো শুনিনি।“

লোকটা কিছুটা সামলে গলা নামিয়ে বলল , “ না অনেকসময় অফিসের প্রয়োজনে যেতে হলে...”

শেফালী যেন লোকটার কথার আসল মানে এবার বুঝল। দৃঢ় গলায় বলল, “ না।“ তারপর ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে উঠে পড়ল। মাথায় বাজ পড়েছিল যেন। দরজা দিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে শুনেছিল” চেহারা সদরঘাট, তেজ কি!”

শেফালী গিয়ে বাসায় এসব বলেনি। মাসুদ ভাই কে বলেছিল। মাসুদ ভাই অবশ্য বকেছিল। বলল, ‘ তোমাকে পরীক্ষা করে দেখেছে, তুমি মেন্টাল প্রেশার কেমন নিতে পার। আর এভাবে তুমি বের হয়ে আসলা। তোমার চাকরী হওয়া খুবই...। খুবই কি সেটা শেষ না করলেও অর্থ বুঝতে অসুবিধা হয়নি শেফালীর। তারপরও মাসুদ ভাই’র রেফারেন্সে দু’এক জায়গা থেকে ডাক এসেছিল। যায়নি শেফালী। ঠিক কেন যায়নি বলতে পারবে না। তার ডাঁট বেশী? বোকা?বেয়াদব? বেশী বোঝে? কি জানি, হয়ত তাই।

একটা ঠিকঠাক প্রেম হলেও হত! বিয়েই কেন হ’ল না আজ পর্যন্ত? প্রশ্নটা করে সবাই, উত্তর জেনেই। তার চেহারা, গায়ের রং, আর পরিবারের আর্থিক অবস্থান গত দশ বছরে এমনকিছু পরিবর্তিত হয়নি যাতে তাকে গ্রহন করা যায়। গত দশ বছরে, আত্মীয়-পরিবার, ঘটকের দুয়ার, বন্ধু,পরিচিত, অপরিচিত সব জায়গা যাচাই করে এই উপলব্ধি পাকাপোক্ত হয়ে মনে সেঁটে গেছে।

শেফালীর বাবার ছোটবেলার এক বন্ধু বিদেশ থাকেন। তারুন্যে একবার বাবা আর তার বন্ধুর মাঝে কথা হয়েছিল তাদের ছেলে মেয়ে হলে বিয়ে দেবেন। বাবা সেই কথা মনে রেখে ফোন করলেন বহু আশা নিয়ে। জানতে পারলেন তার ছেলের বিয়ে অনেক ধুমধামে আগের বছর ঢাকাতেই করিয়ে গেছেন। বন্ধুকে দাওয়াত দিতে পারেননি, ঠিকানা ছিল না, ইত্যাদি ইত্যাদি...। শেফালীর বাবা বড় আঘাত পেলেন। শেফালী এমন হতে পারে জানত। তার মা’ও বলেছিল, কিন্তু তার বাবা বড় স্বপ্নের ঘোরে ঠিক আমলে নেননি।

শেফালীর কি উচিৎ ছিল, সেই কোচিং সেন্টারের পাগল পাগল ছেলেটিকে হ্যাঁ বলা? বয়সে বছর তিনেক ছোট ছেলেটা ওর সাথে কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিত। ওর বাবার রেস্টুরেন্ট ছিল। সেখান থেকে প্রায়ই এটা ওটা এনে খাওয়াত। শেফালী ভাবত, অফিসে অনেককেই খাওয়ায়, তাকেও খাওয়াচ্ছে। কিন্তু একদিন ক্লাসের শেষে বলল, “শেফালী আপু, আপনার সাথে কিছু কথা ছিল । একটু বাইরে কথা বলা যাবে?” শেফালী না বলতে পারেনি। খারাপ লাগত না ছেলেটিকে। গিয়েছিল। ছেলেটি অকপটে বলেছে তাকে ভাল লাগার কথা। শেফালীর ভাল লেগেছিল কিন্তু, এই সম্পর্কের পরিনতি সে দিতে পারবে না। তাই, ভদ্র ভাবে এড়িয়ে গেছে। ছেলেটির নাম রাহাত ছিল। শ্যামলা, মিষ্টি হাসিতে গালে টোল পরত। রাহাত অনেকদিন ঘুরেছে উত্তরের অপেক্ষায়। শেফালী কিছুই বলতে পারেনি। তারপর রাহাত নিজের মত এগিয়ে গেছে। ইউরোপের একটা দেশে চলে গেছে জীবিকার তাগিদে। হয়ত বিয়ে করে সংসারী, বাচ্চা-কাচ্চার বাপও হয়েছে। খোঁজ জানে না শেফালী। তবে, জীবনের চরম কষ্টগুলোয় ছোট ছোট ভালালাগার স্মৃতি রমোন্থনে,বুকের চাপ কমাতে শেফালী আজও রাহাতের হাসিটা মনে করে নেয়।

যে কয়টা ছেলে তাকে দেখে গেছে তাদের অধিকাংশ তার চেয়ে বাবা বিয়েতে কত খরচ করতে পারবে তার হিসেব নিয়ে গেছে। তাদের সেই হিসেব যে মন মত হয়নি সেটা তাদের মত না দেওয়া বা বিরস মুখ দেখেই বোঝা গেছে। কয়েকজন পরিস্কার ভাবেই না জানিয়েছে পরে। এই বদান্যতাটুকু না করলেও তারা বুঝত।

হ্যাঁ, ধনাঢ্য বিপত্নিক এক বয়স্ক পাত্র এসেছিলেন একবার। ছেলে মেয়ে বড় বড় হয়ে গেছে। বড় নিস্বঙ্গ তিনি। খুব আগ্রহ ছিল তার শেফালীর প্রতি। শেফালী শুধু ভাবছিল, পাত্র-পাত্রীর বাজারে তার জন্য হয়ত এমন সম্বন্ধই সম্ভব। সম্বন্ধ এনেছিলেন শেফালীর ফুপি। বাবা তখন একটা কাজে ঢাকার বাইরে। ফিরে সব শুনে ভীষণ রেগে গেলেন। ফুপির সাথে ভয়াবহ ঝগড়া। সম্পর্ক শেষ হয়েই যাচ্ছিল। সে সময় শেফালী মুখ শক্ত করে বলল, “আমি রাজী।“

বাবা পারলে তার গায়ে হাত তুলে বসে। শেফালী বাবার দিকে না তাকিয়ে ফুপিকে বলল, “তুমি ওনাদের জানিয়ে দিও, আমার আপত্তি নেই।“

সে রাতে মা কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে জিজ্ঞাস করল , “ তুই এরকম একটা সম্বন্ধকে হ্যাঁ বললি কেন মা? আমাদের অভাব আছে মানি কিন্তু তাই বলে...”

শেফালী চুপ করে ছিল। মা বলল, “ তোর বাবা তোর ফুপির সামনে মুখ খাওয়া হ’ল। বাপের বয়সী একটা লোক...”

শেফালী কিছুই বলেনি। বুকে অনেক কথা কিলবিল করছিল। বুকটা ফেটে যাচ্ছিল মুখের উপর কথা শোনাতে। সে বলতে পারত, টাকার জন্য আমি বিয়ে করতে চাইছি না মা, তোমাদের অবস্থার জন্যও না। আমাকে সকাল দুপুর যে কথা গুলো শুনতে হয়, যে দৃষ্টি গুলো সইতে হয় সেগুলো আমি আর নিতে পারছি না মা। কেউ আমাকে চায় না মা। কত জনকেই তো হাতে পায়ে ধরলে। এই মানুষটা বড় আগ্রহ করে আমাকে চেয়েছে। শরীর চায় নি, রূপ চায়নি, একজন বন্ধু হিসেবে আমি তার শেষ সময়টায় থাকলে এমন কি ক্ষতি হবে? তোমরাও তো বাঁচবে বল। যূথীর বিয়ে, তোমাদের চৌদ্দটা কথা শোনা, টেনশন সব মিটে যাবে।“

বাসা থেকে রাজী না থাকলেও রাজু যেবার কি একটা মিছিলে গিয়ে গ্রেফতার হ’ল আর ঐ ভদ্রলোকের রেফারেন্সে থানা থেকে ছাড়া পেল বাসার সবাই এই সম্বন্ধের ব্যাপারে নিমরাজী হওয়া শুরু করল। শেফালী’র ঐ ভদ্রলোকের সাথে কথা না হলেও, তার বাবা, মা’র সাথে ফুপির সাথে প্রায়ই ফোনে কথা হতে লাগল। একদিন ওনার পিএ এসে এক বাক্স জামা কাপড় শাড়ি উপহারও দিয়ে গেল। যাওয়ার আগে বলল, “স্যারের শরীরটা ভাল না, একটু সুস্থ্য হলে আপনাদের সাথে সামনাসামনি এসে বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে চান।“

তারপর, বেশ কিছুদিন বাসা থেকে কেউ ফোন করে নি। তারাও আর যোগাযোগ করেনি। এক সন্ধ্যায় ফুপি ফোন করে জানাল, মানুষটা সেই বিকেলে মারা গেছে। বাবা তার ছেলের নাম্বারে ফোন করেছিল। পরিচয় জানার পর লাইন কেটে দিয়েছে।

এই বিষয় নিয়ে কেউ আর একটা কথাও বলেনি। যেন এরকম কোন সম্বন্ধ, কোন মানুষ তাদের জীবনে কখনও আসেনি।

এই যে, এই মুহূর্তে যেসব খাতা সে দেখছে। তার আদৌ কি কোন মানে আছে? প্রত্যেকটা খাতায় সহজ সহজ বানান ভুল। এসব ধরলে একশ তে পাঁচ ছয় নম্বর দিতে ইচ্ছে করে। কিন্তু তা দেওয়া যাবে না।

শেফালী উঠে পরে। ধুপধাপ করে ছাদে ওঠার সিঁড়ির শেষ ধাপে এসে দেখে ছাদের গেট বন্ধ। সে আবার একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। ছাদের গেটের চাবি বাড়িওয়ালার কাছে। এই ভরসন্ধ্যায় সেটা চাওয়া যায় না। সে অন্ধকার সিঁড়িতেই বসে পরে। রাস্তায় হয়তো খোলা হাওয়া তবে সেখানে বড্ড ঘিঞ্জি, আর সস্তা লোকের ভিড়। উদ্দেশ্যহীন হাঁটার জন্য এই শহরে কোন মেয়ের জায়গা নেই। মানুষের মন যত ছোট হয়েছে মেয়েরা ততই লুকিয়েছনে সঙ্কোচের আবরণে। স্বকীয়তা এখন মিশরের মমি হয়ে মেকি হাসি হাসে। সে হাসি , মেকাপের রং চঙে বীভৎস হয়ে চোখে লাগে। তাই তার এই বিবর্ণতাই সই।

যূথী তো কত প্রানবন্ত একটা মেয়ে ছিল। সে হঠাৎ এক ভোরে পাল্টে গেল। তার ফ্যাকাসে মুখে আতঙ্ক আর দুর্ভাবনার গাঢ় কালি। কাঁপতে কাঁপতে সেই এলো শেফালীর কাছে। জড়িয়ে ধরে কাঁদল ফুঁপিয়ে। ভাগ্যিস তখনও বাড়ির আর কেউ ওঠেনি। সেই ভয়ঙ্কর সকাল ভুলতে পারেনা শেফালী। ফোনের নেট ঘেঁটে পাগলের মত যা সে খুঁজে বের করে তা তার খোঁজার প্রয়োজন হত না যদি যূথীর অসুস্থ্যতার কারন যে পুরুষ সে পিতৃত্বের দায় না এড়াতো। ী

যূথী এখন ভালই আছে। বর নৌ বাহিনীতে কাজ করে। দুটো জমজ ছেলে। তার এখন একেবারেই অন্য রূপ। বাঙালি সাজের যূথী এখন প্রায় আরব। তবু সে সুখে আছে, গহনায়, সন্তানে,বর-স্তুতিতে সেটাই বড় কথা। ওর সুখের হাসিতে শেফালীর জন্য করুনা দেখে মাঝে মাঝে। শেফালী এড়িয়ে যায় সে দৃষ্টি। তবু কেন যে বেঁধে!

সেই সকালটায় যূথীর জন্য কাকুতি মিনতি করেনি শেফালী। শুধু, মাসুদ ভাইকে ফোন করে বাড়িতে আসতে নিষেধ করে দিয়েছিল শীতল গলায়। কেউ জানেনি, মাসুদ ভাইও বলেনি কাউকে। তবে, এক সপ্তাহের মাথায় বাড়িতে মাসুদ ভাইএর বিয়ের কার্ড এসেছিল। সেই কার্ড কেউ দেখার আগে ময়লার ঝুরিতে ফেলে দিয়ে আসতে হয়েছে। বাড়িতে মাসুদ ভাইয়ের দেওয়া কিছু গল্পের বই ছিল। সেগুলো একদিন সবার অজান্তে বুড়িগঙ্গায় ফেলে এসেছে শেফালী। গল্পের নায়িকারা বড় সুন্দরী হয়, পড়াশোনায় ভাল হয়, বড় অফিসে ফট করে মোটা বেতনে চাকরী হয়ে যায় তাদের। তাদের রাজপুত্র থাকে, ভালবাসা থাকে। সাদা মাটা মেয়েদের কোন গল্প হয় না, তাদের কোন গল্প থাকতে নেই।