শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪

ঋজুরেখ চক্রবর্তীর কবিতা

আজ ৬ জুলাই অন্যদেশ স্বজন কবি ঋজুরেখ চক্রবর্তীর জন্মদিনে অন্যদেশ পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও অফুরন্ত শুভকামনা।


মায়া

একটি চিঠির খোঁজে

একরাশ পুরনো বাক্সের ডালা

একটা একটা করে খুলে খুলে দেখি,

ছুঁই তার অন্ধকার,

ঘ্রাণ নিই হাঁ-করা গর্ভের।

অবিরল তোমারই এ আয়োজন বিবিধ মুদ্রায়

পুনরাভিনীত হতে হতে শেষে

কখন বিরলে বড় ঘুম পায়, নিজেও বুঝি না।

আধো ঘুমে তারপর

অচিন অসুখী এক মায়াজাতকের কথা মনে পড়ে।

মায়ারা অপূর্ব একা,

মায়ারা প্রজ্ঞাবিনাশিনী,

মায়ারা জটিল হাতে বুনে চলা পশমেরই মতন অনন্ত,

মায়ারা সুন্দর।

একরাশ পুরনো বাক্সের ডালা খুলে খুলে দেখি সারারাত,

অবিরল তোমারই এ আয়োজন বিবিধ মুদ্রায়

পুনরাভিনীত হতে থাকে, তবু

হারানো চিঠিটি আর ভুলেও খুঁজি না।


অগ্নিবর্ণা সিরিজ ৪



আকাশে ঘুমের রঙ,
ক্লান্ত আলো মৃত তারাদের,
বিভক্তি চিহ্নের মতো লটকে থাকা চাঁদ,
পুড়ে যাবে একে একে সব।
চিত্রিত তারুণ্য, আহা, ভেঙে যাবে ফ্রেমে আঁটা মায়াময়তায়।
ভাষা হবে গান, আর
স্বরলিপি ব্যাকুল জিজ্ঞাসা নিয়ে অমেয় প্রতীক্ষায়
চিরঋণী থেকে যাবে একটি ভ্রূভঙ্গির কাছে
কোনও অবচেতনের দিব্য অবসরে।
এইসব হবে, অগ্নিবর্ণা,
স্বপ্নে তুমি পাশ ফিরে শুলে।



এইসব হবে
আর
রহস্যের শেষ ধাপে অমোঘ মোচড়ে এক
ভেঙে যাবে সুরের কাঠামো।
আদিগন্ত আমাদের পায়ে-পায়ে পথ-চলাগুলি
এরকমই ক্ল্যাসিক স্বস্তির গ্রাফ─
উচ্চাবচতাহীন, অবিভাজ্য, মৃদু।



আকাশে ঘুমের রঙ পুড়ে গেলে
পাশ ফিরে আধো স্বরে তুমি বলবে,
কাল রাতে তাড়াতাড়ি ফিরো।


না

সাতমহলা সুখ ছিল সেই সাতটি তারার তিমির জুড়ে!
সাঁঝের শরীর হাত ছুঁয়ে যায়, মনের শরীর শীতকাতুরে
আজও তেমন, মনের কাছেই মন ভাষা চায়, চাইবে কিনা
কিংবা কদিন, বাহুল্য সব। একযুগ তার মুখ দেখি না,
একযুগ তার প্রতি পলের ছুঁয়ে থাকার মনের আঙুল
নিশ্চুপ দূর, সন্ধ্যা বেসুর। নিস্পৃহতা, বাদবাকি ভুল?
একযুগ রাত স্তব্ধ নিথর, একযুগ বা কয়েক বছর
কিংবা ক’মাস, অর্থ একই। নিথর কি আর তেমন পাথর?
সালতামামির পাতায় পাতায় একক মোহের মূক সাধনা!
সাতমহলা সুখ ছিল থাক, অমন কাছে আর যাব না।