শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪

আশিরব্রত চৌধুরীর ​একগুচ্ছ কবিতা


আজ ১২ এপ্রিল। অধ্যাপক,কবি আশিরব্রত চৌধুরীর জন্মদিন। অন্যদেশের পাঠকদের জন্য রইল কবি আশিরব্রত চৌধুরীর একগুচ্ছ কবিতা। কবি আশিরব্রত চৌধুরীর প্রতি রইল অন্যদেশ পরিবারের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

কখনও বর্ষা খুলে দেখা হয়নি
দেখা হয়নি, ধবল রাত্রিনাম।
অথচ আকাশের প্বার্শদেশে আজও খুঁজি
মুখচিহ্ন ও পুরাতনী।
অসার জিহ্বার কথোপকথন।

একাকী বসে হরপ্পা আঁকি।

খুঁজে দেখি কিভাবে সিঁড়িঘাটে সূর্যাস্ত নেমে আসে।
কিভাবে ফাগুন মেখে নেমে আসে বর্ষা।
স্রোত কেমন তীব্র হলে মাটি খুঁজে জলজ ফল।
টিপটিপ বাতিঘরে কখন হানা দেয় সাগর।

খাদের কিনারা ধরে বসে থাকি
তবুও পাখিরা আজ রাত্রি খুলে দেখায়।
অকারনেই শুনিয়ে যায় ভণ্ড কাহিনী ও দুরাচার অভিধান।
মগ্ন কাপালিক চরিত।

ভ্রূনকোষে অন্ধকার।

মনে মনে বলি
কথা বাসী হলেই জন্ম নেয় অসুস্থ কদম।



ডুবিয়ে দিয়েছি আস্তো এক নদী।

পাখির ঠোঁটের পরিভাষা।
ঠিকানায় দোয়েলের নাম।
পলক ঘুমিয়ে গেলে, অসম্পূর্ণ ছবি থেকে
একটি দিগন্ত আকাশ হয়ে উড়ে গেছে।

কেনো যে জানি না
অন্ধকারের শরীরে লেখি সূর্যপ্রপাতের গান।
পাথরের পিচ্ছিল শরীর থেকে
নিজেকে উদ্ধার করি।
মগ্ন হয়ে লেখি
অসংখ্য ধ্রুবতারার যজুর্বেদ পাঠ।
গলিত লাভার পথ।
নেভানো মোমের আলো।

তারকাঁটার মাথায়
হাতুড়ির আঘাতে আঘাতে সূর্য তুলে ফেলি।

তবুও
রামদাসী মল্লারে জীবন গেয়ে নেমে আসে অতীতের রাত।

অনিদ্রা বাজিয়ে দেখি কতটুকু ভোর
কোনখানে অসম্পূর্ণ গান রেখে উঠে গেছে ভীমসেন।



যাপনের কথা লেখো।
শিখে ফেলো বরফের কান্না।
যে পাখি
গোলাপ শেখেনি
তার কাছ থেকে উড়ে গেছে
ব্যর্থ লগ্নের সুফলা বীজ।
শরীরে বল্কল বেঁধে ঝেড়ে ফেলো অতীতের সব পাণ্ডুলিপি।
জানতে হবে
সুতীব্র আলোও একধরনের অন্ধকার।
প্রতিটি পাতার নিঃসরণে
কতটা কান্নার দাগ লেগে থাকে।
বৃক্ষ কি আসলে জানে
দুঃখের প্রতিটি স্তরে লেগে থাকে কতটুকু সুগঠিত রঙ?
মোহাবিষ্ট গোলাপের অরূপ যোগ্যতা।
শিখতে হবে
পাখির প্রতিটি শিস
সপ্তকের কোন্ পর্দায় বাঁধানো।
প্রতিটি কোমল স্বর
কোন্ অলিন্দে সাগর হয়ে
বেলাভূমি খোঁজে।



পরিচর্চা নেই।
আলোর ফেনিল থেকে মুছে গেছে কুঠিরের দায়।
প্রত্যাশা জ্বালিয়ে নেভে ফুটন্ত প্রদীপ।
জন্মান্ধ মঞ্জুরি।

কতোবার গুনে রাখি শস্যক্ষেত্রে পাখিদের রাত।
পরিব্রাজকের নিশিদিন।

ধীরে ধীরে শ্বাসমূলে নিবিড় আঘাত।
পরিচর্চা শেষে জেগে উঠে আস্তাবল।
ছাইদানি থেকে বিদেহী আগুন।

শিথিল হাতের ভাঁজে অসম্পূর্ণ রাত।
গন্তব্যে থামিয়ে দিয়ে কাছে আসে নগ্ন পাললিক।

ডুবিয়ে দিয়েছি আজ অপূর্ণ বিন্যাস।
পুরোনো উপকরণ।



ডানা থেকে ঝরে গেছে পোয়াতি পালক।
গোপনীয় মধুরেণু।
সপূস্পক নিখুঁত বৈশিষ্ট্য।
হিসেব মিলিয়ে দেখি
সাগর ডোবার আগে গ্রহণ লেগেছে কতবার।

নদীভাণ্ডে কতটুকু মাটি
আর অনল কান্নার দাগ।
উদাও হয়েছে। কতটুকু না ফেরার দেশ।
সূর্যের প্রলেপ দিয়ে প্রতিদিন অন্ধকার লিখি।

লাটিমের ঘূর্ণনের মাঝে, নিজেকে বিছিয়ে দিই।
যে ব্রহ্মাণ্ডে গ্রহণ লেগেছে
সেখান থেকেও
টেনে আনি সূর্য।
বারবার বলি
পৃথিবীর সব দুঃখী মানুষেরা
একই সমান্তরালে ছবি আঁকে।

পৃথিবীর কাছে ক্ষমা চেয়ে
যে শবদেহ নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে
সে আসলে। কাশ্যপ গোত্রের জাতক।